ইহলোক ছেড়ে পরলোক গমন করলেন সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষা সন্ন্যাসিনী প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণা (Pravrajika Bhaktiprana)। রবিবার রাত ১১টা ২৪ মিনিটে প্রয়াত হন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০২ বছর। দীর্ঘদিন যাবত বয়স জনিত একাধিক শারীরিক সমস্যায় অসুস্থ ছিলেন তিনি। গত ৫ ডিসেম্বর সন্ন্যাসিনীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তীব্র জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার কারণে তাঁকে রামকৃষ্ণ মিশন সেবা প্রতিষ্ঠান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার থেকে শারীরিক অবস্থা আরও সংকটজনক হতে থাকে। ফুসফুসে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়। রবিবার দুপুরে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। অনেক চেষ্টার পরও তবে শেষ রক্ষা হল না। তিনি চলে গেলেন। থেমে যায় জীবনযুদ্ধ।
জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল ১০ টা নাগাদ তাঁর পার্থিব শরীর সারদা মঠে নিয়ে আসা হবে। ভক্তিপ্রাণা মাতাজির পরলোক গমনে শোকস্তব্ধ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। টুইট করে শোক বার্তা প্রেরণ করেন তিনি। টুইট করে তিনি জানিয়েছেন, ”শ্রী সারদা মঠ ও রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের চতুর্থ অধ্যক্ষা প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণার প্রয়াণে আমি গভীরভাবে শোকাহত। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০২ বছর। প্রবীণা মাতাজি সন্ন্যাসিনী সংঘকে দক্ষতার সঙ্গে নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে সংঘে ও বৃহৎ জনজীবনে গভীর আধ্যাত্মিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শূন্যতার সৃষ্টি হল। এ ক্ষতি অপূরণীয়। শ্রী সারদা মঠের তথা রামকৃষ্ণ সারদা মিশনের সন্ন্যাসিনী ও ভক্তবৃন্দকে আমি আমার আন্তরিক সমবেদনা জানাই।”
I bear a heavy heart upon hearing of the demise of revered Pravrajika Bhaktiprana Mataji, 4th President of Sri Sarada Math & Ramakrishna Sarada Mission.
An incomparable loss for all the followers of the Order and the devotees at large.
May she rest in everlasting peace.— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) December 12, 2022
১৯২০ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণা
১৯২০ সালে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণা। পূর্বে কল্যাণী বন্দ্যোপাধ্যায় নামে পরিচিত ছিলেন তিনি। সারদেশ্বরী আশ্রম ও হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়ে তাঁর পড়াশোনা জীবন কাটে। প্রশিক্ষিত হওয়ার পর তিনি ১৯৫০ সালে টালিগঞ্জের মাতৃভবন হাসপাতালে নার্স হিসেবে কাজে যোগ দেন। পরবর্তী কালে তিনি টালিগঞ্জের মাতৃভবন হাসপাতালের সম্পাদক হয়েছিলেন। তাঁর মাধ্যমেই মাত্র ১০ বেডের প্রসূতি ভবন উন্নত মানের আধুনিক ১০০ বেডের হাসপাতালে উন্নীত হয়। তিন বছর পর ১৯৫৩ সালে ব্রহ্মচর্যে দীক্ষা নেন। শ্রীরামকৃষ্ণের প্রত্যক্ষ শিষ্য তথা রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের চতুর্থ অধ্যক্ষ স্বামী বিজ্ঞানানন্দ ১৯৫৯ সালে তাঁকে দীক্ষা দেন। সন্ন্যাস গ্রহণ করেন ১৯৫৯ সালে। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সপ্তম অধ্যক্ষ স্বামী শংকরানন্দের কাছে তিনি সন্ন্যাস দীক্ষা গ্রহণ করেন।
পরলোক গমন করলেন রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষা সন্ন্যাসিনী প্রব্রাজিকা ভক্তিপ্রাণা