এসএসসি (SSC) শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) গ্রেফতার হওয়ার পর থেকে নানা তথ্য উঠে আসতে শুরু করে। সেই মামলাতেই কলকাতার এক বড় ব্যবসায়ী কে গ্রেফতার করল সিবিআই (CBI)। ধৃত ব্যক্তির নাম প্রসন্ন কুমার রায়। তিনি নিউটাউনের বাসিন্দা। শুক্রবার রাতে নিউটাউনের অফিস থেকে তাঁকে গ্রেফতার করে সিবিআই অফিস নিজাম প্যালেসে (Nizam Palace) নিয়ে আশা হয়। জানা গিয়েছে, তাঁর গাড়ি ভাড়ায় খাটানোর একটি সংস্থা রয়েছে। সিবিআই সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তির নিজস্ব সংস্থার অফিসে লেনদেন সংক্রান্ত রফা হত। এই ব্যক্তির সঙ্গে শুধু মাত্র এই টুকুই যোগ অয়েছে নাকি আরও অনেক গভীরে যোগ রয়েছে সেই কথা জানতে তদন্তকারীরা গোয়েন্দারা আগ্রহী। সূত্রের খবর, নিউটাউনের বড় ব্যবসায়ী প্রসন্ন কুমার রায়কে এলাকার মানুষ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভাগ্নি জামাই বলে চেনেন। এই মামলার তদন্তে নেমে সিবিআইয়ের আধিকারিকরা জানতে পারেন প্রসন্নর কার রেন্টাল সংস্থার অফিসের মাধ্যমেই টাকার লেনদেন হত।
উল্লেখ্য, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা থেকে যে সব চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগ করা হয়েছে, ওই অফিসেই তাদের থেকে টাকা নেওয়ার কাজ চলত। জানা গিয়েছে, রাত ১০ টা থেকে ১১ টার পর কালো কাঁচ তোলা গাড়িতে করে ওই অফিসে টাকা আসত। এমনকি চাকরি প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা আনার জন্য কয়েকজন এজেন্ট ছিল। তাঁদের মধ্যে অন্যতম একজন প্রদীপ সিং। প্রদীপ সিংকে গ্রেফতার করার পরই প্রসন্নর নাম জানা যায়। জানা গিয়েছে, এই প্রসন্ন কুমার রায়ের একাধিক কোম্পানি রয়েছে। সেই কোম্পানির নামে তাঁর বিপুল সম্পত্তি রয়েছে। এছাড়াও নিউটাউন-রাজারহাট এলাকায় প্রচুর সম্পত্তির মালিক তিনি। রাজারহাটের ধারসা মৌজায় প্রায় ১০ কাটা জায়গার উপর একটি বাংলো বাড়ি রয়েছে তাঁর। এছাড়াও বলাকা আবাসনেও ফ্ল্যাট রয়েছে। কলকাতার লেদার কমপ্লেক্স থানা এলাকায় একটি অভিজাত বিশাল ভিলা রয়েছে। সেই ভিলার সামনে একেবারে চোখ ধাঁধানো বাগান রয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ট্যুরিস্ট স্পটগুলোতে তাঁর একাধিক রিসর্ট, বাংলো ও হোটেল রয়েছে।
নিউটাউন এলাকার বাসিন্দারা প্রসন্ন কুমার রায়কে এলাকার বড় ব্যবসায়ী হিসেবে চেনেন
বেশ কয়েকটি চা বাগানেরও মালিক এই প্রসন্ন কুমার রায়। সূত্রের খবর, এক সময় রং মিস্ত্রির কাজ করতেন তিনি। পরে রঙের ঠিকাদারির ব্যবসা শুরু করেন তিনি। কিন্তু হঠাৎ তাঁর এই উত্থান। তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা খতিয়ে দেখছেন একজন রঙের ঠিকাদারের এত বিপুল সম্পত্তি কী ভাবে? নিউটাউন এলাকার বাসিন্দারা প্রসন্ন কুমার রায়কে এলাকার বড় ব্যবসায়ী হিসেবে চেনেন। তাঁর গ্রেফতারি ঘিরে ওই এলাকায় চাঞ্চল্য শুরু হয়েছে। উল্লেখ্য, এই ব্যক্তির নিউটাউনের একটি বিলাসবহুল হোটেলের পাঁচ তলায় অফিস ছিল। সেই অফিস থেকেই এত দিন রিয়েল এস্টেট, হোটেল ও রিসোর্টের ব্যবসা পরিচালনা করা হত। সেই অফিসে অনেক ছেলে-মেয়ে কাজ করত। প্রসন্ন কুমার রায়ে গ্রেফতার হওয়ার পর থেকেই সেই অফিস ফাঁকা। প্রসন্ন কুমার রায় এত কিছু করার জন্য এত টাকা কোথা থেকে পেলেন, সিবিআইয়ের আধিকারিকরা সেই কারণেই তদন্ত করছেন।
রং মিস্ত্রি থেকে বড় ব্যবসায়ী! পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ভাগ্নি জামাই গ্রেফতার