পাকিস্তানের রাজনীতিতে এই মুহূর্তের সবচেয়ে বড় খবর সরকারিভাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বহিষ্কার করা হল ইমরান খানকে। সার্কুলার জারি করে এমনটাই জানাল পাকিস্তানের ক্যাবিনেট। পাক সরকারের পক্ষ থেকে সার্কুলার জারি করে বলা হয়েছে, সরকারিভাবে ইমরান খান আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নন। সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। এরপরই সংবিধানের একাধিক ধারা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এই মুহূর্ত থেকে ইমরান আহমেদ খান নিয়াজি আর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নন।গত বেশ কয়েকদিন ধরেই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদে ইমরান খানের স্থায়ীত্ব নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে উঠেছিল।
উল্লেখ্য, রবিবার সকালে ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করে দেন জাতীয় অ্যাসেম্বলি-র ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান শুরি। এরপর সাময়িকভাবে স্বস্তি পেয়েছিলেন ইমরান খান। ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব সংবিধানের ৫ নম্বর ধারার পরিপন্থী, এই যুক্তিতে খারিজ করা হয় অনাস্থা প্রস্তাব। বিরোধীরা ডেপুটি স্পিকারের অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ করার সিদ্ধান্তকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে মনে করেছেন। অন্যদিকে,রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শেই সংসদ ভেঙে দিয়েছিলেন। ইমরান খান সংসদ ভেঙে নির্বাচনের পথে এগোন ইমরান খান। এমনকি তিনি রাষ্ট্রপতির কাছে পুনঃনির্বাচনের জন্য আবেদন করেন। তিনি সমগ্র দেশবাসীকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত হওয়ার বার্তা প্রদান করেন।
বিরোধীরা আদালতের দ্বারস্থ হয় জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার বিরুদ্ধে। এই আবেদনের ভিত্তিতে রবিবারই পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ শুনানি শুরু করে। এই প্রসঙ্গে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ওমর আতা বন্দিয়াল জানিয়েছেন, জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়া প্রসঙ্গে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর যাবতীয় সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ আদালতের নির্দেশ অনুসারেই হবে।একদিকে সংসদ ভেঙে দেওয়া এবং অন্যদিকে অনাস্থা প্রস্তাব খারিজ সব মিলিয়ে রাজনৈতিক হুলুস্থূল সৃষ্টি হয়েছিল পাকিস্তানে। কিন্তু ইমরান খান শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর পদে টিকে থাকতে পারলেন না। পূর্বে নেওয়া সিদ্ধান্তকে বাতিল করে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে নতুন সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন।
পাক সরকারের পক্ষ থেকে নতুন বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইমরান খানকে পদচ্যুত করা হল
পাক সরকারের পক্ষ থেকে নতুন বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইমরান খানকে পদচ্যুত করা হল।অন্যদিকে,জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার বিরুদ্ধে রবিবার সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল বিরোধীরা। ইতিমধ্যেই ১৯৫জন সদস্যের সমর্থনে শেহবাজ শরিফকে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন। বিরোধীরা সংসদ ভেঙে দেওয়ার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছেন। সেই শুনানিও সোমবার পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়। Pakistan People’s Party-প্রধান নেতা তথা প্রয়াত পাক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর পুত্র বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বে যুদ্ধ শুরুর বার্তা দেওয়া হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন,খুব শীঘ্রই ইমরান খান সরকারের বিরোধিতা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হবেন তাঁরা। এই পুরো বিষয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করতে নারাজ। সব মিলিয়ে পাকিস্তানের রাজনৈতিক আকাশে এক চরম অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে।
সরকারিভাবে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বহিষ্কার ইমরান খানকে