নিজস্ব সংবাদদাতা,অর্পিতা মন্ডল- করোনার অতিমারীতে গোটা দেশ যখন ভয়ে কাঁপছে ঠিক তখনই করোনার তৃতীয় ঢেউ এসে হাজির। ইতিমধ্যেই দৈনিক সংক্রমণ সাড়ে তিন লাখের উপর অতিক্রম করেছে। চতুর্দিকে হাহাকার সহ অক্সিজেন অভাব,স্বজন হারানোর কান্না। বিদ্ধস্ত অবস্থায় এখন মানুষ দিনযাপন করছেন।
বহু মানুষ ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে করোনা প্রতিরোধে গবেষকরা সৃষ্টি করলেন নতুন এক ওষুধ। এই আবিষ্কার নিঃসন্দেহে আশার আলোর সঞ্চার করছে মানুষের মনে। নতুন এই আবিষ্কারক অ্যান্টি-ভাইরাল ওষুধ টি MK-4482 বা মোলনুপিরাভির (Molnupiravir) নামকরণ করা হয়েছে। যা ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সংক্রমণ রুখতে সক্ষম। তবে বিজ্ঞানীরা এখনও এই ওষুধের ব্যাপারে ১০০ শতাংশ সন্দেহমুক্ত নন। এই ওষুধ নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে ।
রেমডেসিভির এবং ফ্যাভিপিরাভির ইজেকশন গুলি করোনা রোধে ব্যবহার করা হলেও চিকিৎসকরা বলছেন,করোনা সারাতে এই সব ইঞ্জেকশন পুরোপুরি বিশ্বাসযোগ্য নয়। আর সবচেয়ে বড় সমস্যা এ গুলি শিরার মধ্যে দিতে হয়। যা একজন চিকিৎসক বা নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী ছাড়া অন্য কেউ দিতে পারবেন না। কিন্তু MK-4482 মানুষ ওষুধের মতই খেতে পারবেন ।
আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ (National Institutes of Health) এবং ব্রিটেনের ইউনিভার্সিটি অব পলিমাউথ (University of Plymouth) এর যৌথ উদ্যোগে এই ওষুধটি আবিষ্কার করেছে। জর্জিয়া স্টেট ইউনিভার্সিটির একটি গবেষক দল ‘মোলনুপিরাভির’ ওষুধটির কার্যকারিতা সম্বন্ধে গত ১৬ এপ্রিল নেচার কম্যুনিকেশন জার্নালের একটি গবেষণাপত্রে জানিয়েছেন। এই ওষুধটি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের উপর কাজ করতে সক্ষম। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে করোনা ভাইরাসকে রুখতেও আশাজনক ফল দিচ্ছে এই ড্রাগটি ।
NIH এর অতিথি গবেষক এবং Plymouth এর ভাইরোলজি ও ইম্যুনোলজির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর মাইকেল জার্ভিস জানিয়েছেন, এই ওষুধটি সার্স-কোভ-২( SARS-CoV-2) কে সম্পূর্ণরূপে প্রতিহত করতে সক্ষম। তবে এতে সবচেয়ে ভাল কাজ হয়, যদি সংক্রমিত হওয়ার ১২ ঘণ্টা আগে বা পরে এটি খাওযা যায়।
অন্যান্য সব ওষুধের মতোই সরাসরি এই ওষুধটি খাওয়া যায়। খুব তাড়াতাড়ি এর ফল পাওয়া যাবে বলে জানা গেছে। সংক্রমণ মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছতে দেয় না এটি। খুব তাড়াতাড়ি রোগ মুক্ত ঘটে, ফলে বেশিদিন আইসোলেশনে কাটাতে হয় না এবং সংক্রমণের মাধ্যমে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও কম থাকে ।